টুকরো খবর টুকরো খবর

ইমাম হুসাইন (আঃ)-এর শোকে নারকেল বেড়িয়ার কারবালায় আশুরা অনুষ্ঠিত

নূর বার্তা সংস্থা : প্রতি বছরের ন্যা এ বছরও করোনা বিধিনিষেধ মেনে  নারকেল বেড়িয়ার কারবালায় ইমাম হুসাইন (আঃ)-এর শোকে আশুরা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল নারিকেল বেড়িয়া শহীদ তিতুমীর কারবালা কমিটি। একশো শতাংশই সফল তারা।  তাই, মহরমের পর (২০ অগস্ট ২০২১ শুক্রবার) নারিকেল বেড়িয়াবাসীর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত বাদুড়িয়া পুলিশ- প্রশাসনের। কারণ, চাইলেই নিজেদের কাজটুকু সঠিক ও সুস্থ ভাবে করা যায়। যা পুলিশ- প্রশাসনের পক্ষে আরও সহজ। কিন্তু, তাঁরা করছে না বলেই লিখতে বাধ্য হচ্ছি। এই লেখা পড়ে তাঁদের ‘চেতনা’ জাগবে এমনটাও নয়!

 

কী করল নারিকেল বেড়িয়া শহীদ তিতুমীর কারবালা কমিটি? প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে কম লোকজন নিয়ে ‘মহরম’ করেছে। সারাদিন গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছুটে দেখলাম, প্রায় ৯৯ শতাংশ শিয়া ভাইদের মুখে মাস্ক রয়েছে। মোড়ে ‘হুসাইনি সৈনিক’ সদস্যরা ‘দো গজ কি দুরি’র প্রতি শকুনি নজর রেখেছে। সামান্য নড়চড় হতে দিচ্ছে না। কারণ, তাঁরা সংকল্পবদ্ধ। প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করেছে, সব কিছু বজায় রেখে মহরম করবে। তাঁরা করে দেখিয়েছে।

 

বিগত বছর গুলির মহরমের কথা বলি।

 

আগে বসিরহাট মহকুমার একাধিক গ্রাম থেকে শিয়া মা-ভাই-বোনেরা আশুরা শেষে ধস্ত শরীরে দশই মহরম সকালে কেওশা/নারিকেল বেড়িয়া কারবালায় আসতেন। মজলিশের পর দুপুর সাড়ে বারোটা- একটা নাগাদ  কেওশাতে নামাজ শেষ করে  কারবালার উদ্দেশ্যে থেকে মিছিল বের হত। এক এক করে কুলিয়া, মাসিয়া, মান্দ্রা…. গ্রামের শিয়ারা মাতম করতে করতে নারিকেল বেড়িয়ার কারবালায় আসতেন। তাবুত, তাজিয়া, দুলদুল থাকত মিছিলের প্রথম সারিতে। শেষ হতে রাত আটটা- ন’টা বাজত। রাস্তার দুপাশে দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। তিল ধারণের জায়গা থাকত না। অফিস টাইমের বনগাঁ লোকাল কিংবা গেদে লোকালের ভিড়ের সঙ্গে তুলনা করতেই পারেন। সুতরাং, বাদাম ভাজা- মনোহরী দোকান থাকাটাও স্বাভাবিক ছিল। রাত বারোটা- একটা পর্যন্ত কারবালা পার্শ্বস্থ মাঠে লোকজন থাকতেন। প্রায় তিন দিন জিলাপী পাওয়া যেত। নাগরদোলা থাকতো। চপ, ফুচকা তো ছেড়েই দিন। হরেক মাল দশটা টাকা পাওয়া যেত।

কিন্তু, এ বছর সেই ছবি দেখা যায়নি। সৌজন্যে-নারিকেল বেড়িয়া শহীদ তিতুমীর কারবালা কমিটি, তাতহির ওয়েলফেয়ার ফাউনডেশান ও আল আমান জাফারি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অন্যান্য কমিটির সহয়াতা। মানুষ বাঁচিয়ে ধর্ম পালন করেছে তারা।শিয়া মা-বোন, বৃদ্ধ-শিশুদের রাস্তায় উঠতে দেওয়া হয়নি। গ্রামে ঢোকার চারটিই রাস্তার মুখে ‘হুসাইনি সৈনিক’ সদস্যরা পাহারায় ছিল। মিছিলে আগত শিয়া ভাই ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেননি তাঁরা। বাইরে থেকে আসা দর্শকদের অনুরোধ করে বাড়ি পাঠানো হয় তাতহির ওয়েলফেয়ার ফাউনডেশান সদস্য দের অনুরোধে। গ্রামের কোনও চা-মুদিখানা খোলা রাখা হয়নি। বাদুড়িয়ার ১৬টি শিয়া গ্রাম থেকে মাত্র ৩০-৩৫ জন  করে ছোট জুলুস করে  মিছিলে যোগ দেয় প্রত্যেক অঞ্জুমান। কোন গ্রাম, কখন কোন রাস্তা দিয়ে আসবে তা আগেই ভাগ করে দেওয়া হয়। মাতম-জিয়ারাতের জন্য সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছিল। এ বছর আল আমান জাফারি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের পক্ষ মেডিকেল ক্যাম্প, অটোমেটিক স্যানিটাইজার গেট, বিস্কুট, পানি,লস্যি ইত্যাদির ব্যাবস্থা করা হয়েছিল।

 

লেখক সম্পর্কে

Admin

মতামত জানান

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.