নূর বার্তা সংস্থা:ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস গাজার পুনর্গঠন তৎপরতা আরো দ্রুত করার জন্য মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূতের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। হামাসের রাজনৈতিক দফতরের উপপ্রধান মুসা আবু মারযুক জাতিসংঘের সমন্বয়কারী ও বিশেষ দূত রবার্ট সেররি সঙ্গে সাক্ষাতে এ আহবান জানিয়েছেন।
হামাসের এ কর্মকর্তা গাজা সীমান্তের সব ক্রসিং পয়েন্ট স্থায়ীভাবে খুলে দেয়ার জন্য জাতিসংঘের এ কর্মকর্তার প্রতি আহবান জানিয়েছেন। গত জুলাই মাসে গাজা উপত্যকায় একটানা ৫০ দিন ধরে ইসরাইলি সেনাদের বর্বরোচিত হামলায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও বহু স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন সেসব পুনর্গঠনের কাজ চলছে। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার গাজা সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে, অবরুদ্ধ হওয়ার কারণে দুর্বিসহ পরিস্থিতি থেকে গাজাকে উদ্ধার করা এবং ভবন নির্মাণের জন্য জরুরী পণ্য সামগ্রী আসতে বাধা দেয়া থেকে ইসরাইলকে বিরত রাখা।
ইহুদীবাদী ইসরাইল এমন সময় ভবন নির্মাণ সামগ্রী আসতে বাধা দিচ্ছে যখন যুদ্ধবিরতি অনুযায়ী ইসরাইল গাজার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এ ছাড়া, ইসরাইল গাজা পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক তৎপরতায়ও বাধা দেবে না বলে ওয়াদা করেছিল। ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করার পর এ পর্যন্ত তিনটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। প্রথমে ২০০৯ সালে ২২ দিনের যুদ্ধ এরপর ২০১২ সালে ৮দিনে যুদ্ধ এবং সর্বশেষ চলতি বছর ৫০ দিনের ভয়াবহ যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। ইসরাইলের এসব হামলায় গাজার অধিবাসীদের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রতিবেদনে সেখানকার দুরবস্থার কথা তুলে ধরেছেন।এদিকে দখলদার ইসরাইলের সমর্থক পাশ্চাত্যের বৃহৎ শক্তিগুলোর চাপের মুখে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে রিপোর্ট প্রকাশ ও নিন্দা জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এবং ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ ঠেকাতে এ সংস্থা আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। ফিলিস্তিন বিষয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদক ম্যাকরিম ওয়েবি সুনু তদন্ত কাজ চালানোর সময় বহুবার তাকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানানো হলেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো কাজই করেননি। এ থেকেই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সীমাহীন অপরাধযজ্ঞের চিত্র পাওয়া যায়। বিশেষ করে পাশ্চাত্যের সরকারগুলোর সমর্থনে ইসরাইল আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষ করে এ অঞ্চলের দেশগুলোর উচিত গাজা পুনর্গঠনে এবং সেখানকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা নিরসনে তাদের দায়িত্ব পালন করা। তাদের মতে গাজা পুনর্গঠনে যে কোনো শিথিলতা সেখানকার অধিবাসীদের জন্য করুণ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।